শুক্রবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০১:০৯ পূর্বাহ্ন

ভালুকায় পলাশের রঙে রঙ্গিন মহাসড়ক

ভালুকায় পলাশের রঙে রঙ্গিন মহাসড়ক

আবুল বাশার শেখ, ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি:: ময়মনসিংহের ভালুকায় পলাশের রঙে রঙ্গিন এ এক অন্য রকম মহাসড়কের দৃশ্য মন হরণ করে নেয় খুব সহজেই। ঋতুরাজ বসন্তের মাঝামাঝি সময়ে পূর্ণ ফুলের ছড়িয়ে পরা প্রকৃতিকে নতুন করে যেনো সাজিয়েছে। মহাসড়কে আগুনরাঙা পলাশ ফুলের ছোঁয়ায় নান্দনিক সৌন্দর্যে প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে চলাচলকারী মানুষকে।

আগুনরাঙা পলাশ ফুল ফুটেছে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভালুকা থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার এলাকার সড়কের বিভাজকে। মহাসড়কে গাড়িতে চলতে চলতে ফুলের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হন যাত্রীরা। এই সুন্দর থেকে বঞ্চিত হন না পথচারীরাও।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) ময়মনসিংহের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মোঃ শওকত আলী বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চারলেন হওয়ার পর সড়ক বিভাজকে নানা প্রজাতির ফুলের গাছ লাগানো হয়। সৌন্দর্যবর্ধন ও বিভাজকের মাটি আটকে রাখার জন্য ওই গাছ লাগানো হয়। এর মধ্যে পলাশও আছে। বসন্তে পলাশ ফোটে। এ ছাড়া ঋতুভেদে এখানে ফোটে সোনালী, কৃষ্ণচূড়া, শিমুল সহ নানা ধরনের ফুল। মহাসড়কের ভালুকা অংশের স্কয়ার মাস্টারবাড়ি, সিডস্টোর, ভালুকা, ভরাডোবা সহ পার্শ্ববর্তী ত্রিশাল উপজেলায় পলাশ ফুল চোখে পড়ে। যত দূর চোখ যায়, শুধু রঙিন পলাশ আর পলাশ।

ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজের শিক্ষার্থী ভালুকার সুচিত্রা রানী বর্মন বলেন, ভালুকা থেকে ময়মনসিংহে কলেজে যাই। গাড়ি থেকে রাস্তার ডিভাইডারে পলাশ ফুলগুলো দেখতে সুন্দর লাগে, মন খারাপ থাকলেও মন ভালো হয়ে যায়।

ভালুকা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ মালেক খান উজ্জল জানান, ফুলকে ভালোবাসে না পৃথিবীতে এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর! ঘর থেকে গন্তব্যে-কর্মস্থলে গমনে রাস্তায় যদি নয়নাভিরাম দৃশ্য চোখে পরে তখন মনটা এমনিতেই সতেজ হয়ে উঠে আর এমন সুখানুভূতির পরশ পাওয়া যায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ডিভাইডারে ফুটে থাকা পলাশ ফুলের সমারোহে।

পলাশ ভারতীয় উপমহাদেশের ফুল। বাংলাদেশে এই ফুল বেশি ফোটে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম, পুরুলিয়া এলাকায় এই ফুলের দেখা মেলে। বেঙ্গালুরুতেও পলাশ আছে। পলাশ ফুল লাল, লালচে কমলা, হলুদ ও সাদা রঙের হয়ে থাকে। এই গাছের নানা ঔষধি গুণও আছে। বসন্তে গাঁটের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে অনেকে এই ফুল ব্যবহার করেন। পলাশ গাছের ছাল, পাতা ও বীজ নানা রোগ সারাতে কাজে লাগে। চর্মরোগ, জ্বর, ডায়রিয়া, ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসায় এর ব্যবহার আছে।
যুগে যুগে কবি-সাহিত্যিক আর শিল্পীদের কথা-গানে-ছবিতে পলাশ ফুল এসেছে বারবার। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখায় পলাশ এসেছে এভাবে—‘হলুদ গাঁদার ফুল, রাঙা পলাশ ফুল/এনে দে এনে দে নইলে/বাঁধব না, বাঁধব না চুল…।’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানে-কবিতায় অসংখ্যবার এসেছে পলাশের কথা।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com